স্ত্রীকে খুন করে দেহ বস্তাবন্দী করে লোপাটের চেষ্টা : গোয়ালঘরের মাচা থেকে উদ্ধার দেহ

30th April 2021 8:59 pm বর্ধমান
স্ত্রীকে খুন করে দেহ বস্তাবন্দী করে লোপাটের চেষ্টা : গোয়ালঘরের মাচা থেকে উদ্ধার দেহ


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  সিনেমার চিত্র নাট্যকেও হার মানিয়ে দেওয়ার মতো স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা কষেছিল স্বামী । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ।শ্বশুর বাড়ির গোয়াল ঘরের মাচা থেকে বস্তা বন্দি  অবস্থায় উদ্ধার হল তিন মাস আগে বিয়ে হওয়া বধূর মৃতদেহ। মৃতার নাম ফুলকলি খাতুন (১৮)।ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কাইগ্রামে।তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী বাবু শেখ কে গ্রেপ্তার করেছে । ময়নাতদন্তের জন্য বধূর মৃতদেহ শুক্রবার পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ মর্গে। অভিযুক্ত জামাইয়ের ফাঁসির সাজার দাবি করেছেন বধূর মা ও আত্মীয় পরিজন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বরের কাইগ্রামের পাশাপাশি পাড়ায় বসবাস করেন বাবু শেখ ও তাঁর স্ত্রী ফুলকলির 
পরিবার । বাবু ও ফুলকলির মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিন মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়।হঠাৎকরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাবু শেখ বলতে শুরু করে তাঁর স্ত্রী অশান্তি করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে । তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর রাতে ফুলকলির শ্বশুর বাড়ির গোয়ালঘরের আশপাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে  ।সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীরা বধূর বাবার বাড়ি ও মন্তেশ্বর থানায় খবর দেয় । খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়।বাবু শেখের বাড়ির গোয়ালঘরের মাচা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হয় বধূর মূতদেহ । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, স্বামী বাবু শেখ এর পরিকল্পনা ছিল বধূকে খুন করার পর দেহ লোপাট করে দেওয়ার।সেই কারনেই  বাবু তাঁর স্ত্রীর  দেহ  বস্তাবন্দি করে গোয়ালঘরের মাচায় তুলে রেখেছিল ।কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় বৃহস্পতিবার  রাতে মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার কারণে। জেরায় বধূকে খুনের 
কথা কবুল কার পরেই পুলিশ বাবু শেখ কে গ্রেপ্তার করে । খুনের ধারায় মামলা রুজু করে  পুলিশ শুক্রবার ধৃতকে কালনা আদালতে পেশ করে তদন্তের প্রয়োজনে নিজেদের হেপাজতে নিয়েছে ।  বধূর মা কোহিনুর মল্লিক জানিয়েছেন ,ভাব ভালবাসা করে বিয়ে করলেও তাঁর মেয়ের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। জামাই ও তার পরিবার প্রায়শই টাকা পয়সার দাবি করতো । 
 এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফুলকলির স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির তরফে বারবার বলা হচ্ছিল, ঘরের বউ ঝগড়ঝাঁটি করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। জামাই বাবু শেখও  বাইকে চেপে তাঁর মেয়েকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে । তখন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি জামাই নৃশংস ভাবে খুন করে ফুলকলির দেহ বস্তায় পুরে গোয়ালের মাচায় তুলে রেখে দিয়েছে।কোহিনর মল্লিক বলেন ,দেহে পচন ধরে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণেই জানতে পারা গেল তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে । নয়তো দেহটাই হয়তো জামাই ও শাশুড়ি মিলে গায়েব করে দিত ।  বধূর মামা হীরা মল্লিক বলেন , ঠিক কবে তাঁর ভাগ্নিকে  জামাই বাবু শেখ খুন করেছে সেটা এখনও তাঁদের কাছে পরিস্কার নয় ।তবে এটুকু বুঝতে পারছেন, সিনেমার চিত্র নাট্যকেও হারমানিয়ে দেওয়ার মতোন নিখুঁত পরিকল্পনা করে বাবু শেখ তাঁর স্ত্রী ফুলকলিকে খুন করেছে । মৃতদেহ লোপাট করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলেই দেহটি বস্তাবন্দি করে গোয়াল ঘরের মাচায় তুলে রেখেছিল ।আর কেউ যাতে এই পরিকল্পনা টের না পায় তার জন্যেই বাবু শেখ লোক দেখানো ফুলকলির খোঁজ চালাচ্ছিল বলেই তারা মনে করছেন ।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।